সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

প্রধান শিক্ষকের গাফিলতির কারণে এসএসসি পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত জহুরা 

ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রধান শিক্ষকের গাফিলতির কারণে এসএসসি পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত জহুরা 

নওগাঁর ধামইরহাটে চলমান এসএসসি পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে জহুরা জাবিন নামের এক শিক্ষার্থী। উপজেলার ভাতকুন্ডু খাতেমন নেসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের গাফিলতির কারণে ওই ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বড় ভাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর গত বুধবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার।

ওই শিক্ষার্থীর ভাইয়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জহুরা জাবিন ভাতকুন্ড কেএন উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২৩ সালের একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতসহ কোচিং করেছে। গত ২৭ এপ্রিল সে প্রতিদিনের ন্যায় সকাল অনুমান সাড়ে ৯টার দিকে বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশ পত্র নেয়ার জন্য যায়। 

তখন প্রধান শিক্ষক জহুরাকে প্রবেশপত্র না দিয়ে জানান যে, তোমার প্রবেশপত্র বোর্ড থেকে আসেনি। এই কথা শুনে সে কান্নাকাটি করে বাড়িতে এসে ঘটনাটি জানায়। তখন পরিবারের সদস্যারা বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে শুরু করে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বড় ভাই আবু সাঈদ বলেন, ঘটনাটি বাড়িতে বলার পর আমার স্ত্রী মোসা. লিজা পারভীন ও বোন জহুরা প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে প্রবেশপত্র নেয়ার জন্য গেলে প্রধান শিক্ষক তাদের সাথে দেখা করেনি এবং প্রধান শিক্ষকের মোবাইলে ফোন করিলে ফোনটিও রিসিভ করেনি। 

তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক আমার নিকট হতে ফরম ফিলআপ করা বাবদ সর্বমোট ৮ হাজার ৭০০ টাকা নেয়। আমার বোন এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় বর্তমানে মানসিকভাবে অশান্তিতে ভুগতেছে।

আবু সাঈদ অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের অবহেলার কারণে আমার ছোট বোন পরীক্ষা দিতে পারেনি। গত শিক্ষা অফিসার স্যার তদন্তে এসেছিলেন। তিনি অল্প সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিবেন বলে জানান। আমি প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ওই শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় আটটি বিষয়ে ফেল করে। তার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি অতিরিক্ত ক্লাসে আসার অনুমতি দিয়েছিলাম। তার কাছে থেকে কোন টাকা নেয়নি। তারা এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার আলী শাহ মুঠোফোনে বলেন, এবিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিলে সেটির তদন্তভার আমার ওপর আসে। সে প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে তদন্তে গেলে অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া যায়। 

ওই শিক্ষার্থী চলতি বছরে যে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছে না এবিষয়ে কোনো করণীয় আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে কোনো কিছু ক্ষতি হয়ে গেলে সম্পূর্ণ যেমন ফেরত পাওয়া যায় না, তেমনিভাবে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারার কারণে শিক্ষার্থীর যার কারণে ক্ষতি হয়েছে তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

তাই খুব শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে। এরপরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্যার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

টিএইচ